চাকরি পাবার সহায়তার জন্য কিংবা রেজুমেটি শেয়ার করে রাখবার জন্য প্রায়শই অনেকে মেসেজ দেন। প্রত্যেকেকে আমি একটি ডিফল্ট মেকানিজমের ভিতর দিয়ে নিয়ে যাই। সেটি হল, আমার ও আমার সুহৃদদের সহযোগে পরিচালিত ক্যারিয়ার সংক্রান্ত ফেসবুক গ্রূপ CAMP এ যুক্ত করা।
চাকরির সার্কুলার থাক বা অগ্রীম এপ্রোচ হোক, প্রত্যেকেই বলেন, ভাই, আপনার মেইল আইডিটা দিন, মেইল আইডিটা এসএমএস করে দিন, মেইল করেছি দেখুন-ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি প্রত্যেককে বলি, রেজুমে দিতে চাইলে সেটিকে ইনবক্স করতে। তারপরেও মেইল আইডি চান। ভাইয়েরা, মেইল আইডি কোনো হিরা জহরত না, যে, সেটি দিতে চাইব না। ইনবক্স করতে বলি দুই পক্ষের সুবিধার জন্যই। হ্যা, আমার জি-মেইলটি একটি একটিভ আইডি, ওখানে প্রচুর কাজ হয়। বিধায় সেটির ট্রাফিককে নিয়ন্ত্রণে রাখার প্রয়োজনীয়তা আমার আছে ঠিকই। তারপরও, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের চেয়েও অন্য বাস্তবতায় সবাইকে রেজুমে মেসেঞ্জারে ইনবক্স করতে বলি।
কেন বলি?
কারন, আপনাদের সাথে একজন জব লিংকারের সবচেয়ে বেশি যোগাযোগ ও ইন্টার্যাকশন কোথায় হবে? ফেসবুকে (ও মেসেঞ্জারে)। আপনি ফলোআপগুলো বেশি ও র্যান্ডম কোথায় করবেন? মেসেঞ্জারে। ইন্টার্যাকশন ও ইনসট্যান্ট কানেকশনের জন্য সবচেয়ে সহজ ও দ্রূত কোনটা হয়-মেসেঞ্জার। নানা কারনেই। এখন, আপনি যোগাযোগ রাখছেন মেসেঞ্জারে, নক করছেন মেসেঞ্জারে, ফলোআপ করছেন মেসেঞ্জারে, ফেসবুক বা লিংকডইন দেখে নক করছেন মেসেঞ্জারে/লিংকডইন মেসেজে। অথচ আপনার রেজুমেটা আছে আমার মেইলে।
অনেকেরই আবার ফেসবুক নেম, মেসেঞ্জার নেম ও মেইল আইডি ও তার ডিসপ্লে নেম ভিন্ন। এখন আপনিই বলুন, মেসেঞ্জারে আপনার নক পেয়ে মেইল ঘেঁটে আপনার রেজুমে বের করে তারপর সেটা কোথাও দেয়া, বা রেজুমেটি তৎক্ষনাত রিভিউ করা-বিষয়টা একস্থানে-মেসেঞ্জারে থাকলেই ভাল হয় না? হোয়াটসএ্যাপ, ভাইবার, টেলিগ্রাম, ইমু, স্কাইপ-এসব মাধ্যমে দিলেও লাভ হয় না।
কারন, ওসব এ্যাপে থাকা মেসেজ কিছুদিন পরপরই মুছে দিতে হয়, স্পেস সেভ করতে এবং বক্সগুলো ভিউ ফ্রেন্ডলী রাখতে। হ্যা, মেসেঞ্জারে মোবাইল হতে ওয়ার্ড বা পিডিএফ ফাইল পাঠানো যায় না। (ল্যাপটপ বা পিসি হতে যায়।) আর জেপিজি রেজুমে কোনো কাজে আসে না। ঠিক। আবার আপনার হয়তো ল্যাপটপ নেই। অফিসের পিসি হতে পাঠানোও অসুবিধা। ঠিকও না। তাহলে উপায়? যেকোনো স্থান হতে পিসি/ল্যাপটপে বসে (দরকার হলে সাইবার ক্যাফে) আপনার পিডিএফ করা রেজুমেটি খুব বিশ্বস্ত একজন ফেসবুক ফ্রেন্ডকে মেসেঞ্জারে দিয়ে রাখুন।
প্রতিবার রেজুমে আপডেট করলে ওখানে দিয়ে রাখবেন। দরকার হলে, নিজের আরেকটি আইডি বানিয়ে নিন, যেটি অন্য কখনো ব্যবহার করবেন না। তারপরে নিজের মেসেঞ্জারে নিজেই রেজুমে লোড করে রাখবেন। তার পরে, যখনই কেউ ইনবক্সে/মেসেঞ্জারে রেজুমে চাইবে আর আপনি তখন পিসি/ল্যাপটপ হতে দূরে, অথবা আপনার ওই দুটো নেই, তখন, ওই যে, ইনবক্স করা রেজুমেটি আছে, সেটি মোবাইল হতে ফরোয়ার্ড করুন। মোবাইল মেসেঞ্জারে নতুন পিডিএফ লোড করা না গেলেও আগে হতে থাকা ওয়ার্ড বা পিডিএফ ফাইল/মেসেজ ফরোয়ার্ড ঠিকই করা যায়।
সোশ্যাল মিডিয়া অথবা মেসেজিং এ্যাপ বানানো নিয়ে যারা কাজ করেন, তাদের কাছে অনুরোধ করতে চাই, দয়া করে আপনারা যখন নতুন কিছু বানাবেন অথবা আপডেট করতে চাইবেন, সেটাতে যেন বাজারে প্রচলিত অন্যসব এ্যাপের কমোন সুবিধা বা ফিচারগুলো বাই ডিফল্ট যুক্ত থাকে। ঠিক যেভাবে, দুনিয়া জুড়ে, চিকন পিনের চার্জার আর চ্যাপ্টা পিনের চার্জার এখন এক হয়ে সবাই একই স্লটের চ্যাপ্টা চার্জিং পয়েন্ট করে নিয়েছে।
মেসেঞ্জারে সবই আছে, পিডিএফ ফাইল আপলোড করার অপশন কেন রাখা হয়নি-সেই প্রশ্নটি কি কেউ শিরিল খালা অথবা জুকার মামাকে জিজ্ঞেস করবেন?
#resumemaking #resumewriting #resumesharing #inboxingresume #joblinking #jobapproaching #sharingresume