কোনো কিছু ভাইরাল করার আগে, অথবা, কোনো হাইপে গা ভাসানোর আগে, দশবার ভাবুন। তারপরে, আরো দশবার ভাবুন। তারপরে, যা করার করুন।
কয়েকদিন আগে একটা হাইপ উঠল, রাস্তার ভিক্ষুকদের নগদ টাকা ভিক্ষা না দিয়ে সরাসরি খাবার কিনে দিন। তাতে নাকি মানব পাচার ও শিশুদের ভিক্ষাবৃত্তিতে বাধ্য করা কমে যাবে। সাধু সাধু। আমি জানি সেটা হতে পারে। পজিটিভ ভাবনা। সমস্যা হবে কোথায়? সেই বিপরীত দিকটা ভেবে নেবার জন্যই ১০ বার ভাববার কথাটা বলেছি। ভিক্ষুক তো শুধু খাবার যোগাড়ের জন্য ভিক্ষা করে না। বা তার একার জন্যও ভিক্ষা করে না।
ভিক্ষুকের ও তার পরিবারে খাবার লাগে (যার মধ্যে আছে অত্যাবশ্যকীয় খাবার চাল, ডাল, তেল, নুন, পানি, এবং মাঝে সাঝে একটু সখের খাবারও), বাসা ভাড়া (কিছু কিছু ক্ষেত্রে), ওষুধ, কাপড়, চিকিৎসা, যাতায়াত ভাড়া লাগে। ভিক্ষুক একজন মানুষ ও নাগরিক হিসেবে তার সন্তানের জন্য শিক্ষা খরচ লাগে, বই খাতা কিনতে হয়, ভিক্ষুক নারীর স্যানিটারী প্যাড কিনতে হয় (জ্বি, ভিক্ষুক নারীদেরও পিরিয়ড হয়), ভিক্ষুকদেরও কনডম বা মায়া বড়ি কিনতে হয়। বিড়ি-সিগরেট বা গাঁজা হতে শুরু করে ’জুম্মাবারে’ মসজিদে যাবার মতো একটা টুপি ও পাঞ্জাবী। (নোংরা কাপড়ে গেলে আপনারাই ঢুকতে দেবেন না।) আরও বলব?
তো, আপনি যদি তাকে ১০ টি টাকা ক্যাশ দেবার বদলে ১০ টাকার কলা+ বনরুটি কিনে দেন, আর সারাদিনে সে ১০০ জনের কাছ থেকে ১০ টাকা করে ১,০০০ টাকা পাবার বদলে ১০০ ইউনিট কলা+বনরুটি পায়, সেগুলো দিয়ে কি সে মায়াবড়ি বা স্যানিটারী প্যাডের চাহিদা মেটাতে পারবে?
নাকি ক্ষুধা+পিরিয়ড+ডায়রিয়া+সঙ্গম>সব কাজে ওই রুটি+বন দিয়েই চালিয়ে দেবেন? নাকি দোকানে নিয়ে গিয়ে সেগুলো বিক্রী করে অথবা দ্রব্য বিনিময় প্রথার মাধ্যমে অদল বদল করে মায়াবড়ি নিতে পারবে? ভাবুন। ভাবুন। ভাবুন। ঠিক যেমন, এই লেখাটা আমি ৪৫ দিন আগে হতে ভেবেছি। ৪৫ দিন পরে লিখলাম। কোথায় বসে লিখলাম জানেন? কমোডে।
#poverty #humanity #humanrights #streetbegger #beggingasprofession