Human Resource Development বা HR নিয়ে আমাদের বহু বছরের দৌড়ঝাঁপের টক মিষ্ট প্রতিফলের সবচেয়ে হতাশাজনক অংশ হল, ১. এত বছরেও আমরা ওই HUMAN কে সত্যি সত্যিই ‘মানুষ’ হিসেবে মূল্যায়ন করবার মতো মানসিকতা ও দৃষ্টিভঙ্গিটা গড়ে তুলতে পারিনি। ২. HUMAN DEVELOPMENT এর চেয়ে HR এর মধ্য দিয়ে আমরা আইন-কানুন ও মেকানিজম ডেভেলপমেন্টে বেশি পারঙ্গমতা দেখিয়েছি।
প্রতিষ্ঠানের বিজনেস স্ট্র্যাটেজি নির্ধারন করতে এইচআরকে কেন সম্পৃক্ত করা দরকার?
খুব সোজা কথায় বললে বলা যায়, আপনার প্রতিষ্ঠানে বিজনেস কন্টিনিউয়েশন ও বিজনেস ডেভলপমেন্টের জন্য যত স্ট্র্যাটেজী নির্ধারন করবেন, যত প্ল্যান গ্রহন করবেন, যত প্রোগ্রাম নির্ধারন করবেন-সেগুলো বাস্তবায়ন করবে আপনার নিয়োজিত কর্মীরা। যেকোনো বিজনেস প্ল্যান বাস্তবায়ন করার জন্য উপযুক্ত ম্যানপাওয়ার ও তাদের সর্বোচ্চ আন্তরিকতাতো লাগবেই তাই না?
তো কর্মী নিয়োগ করা এবং তাদের কাজ বরাদ্দ ও মনিটরিং করার দায়ীত্ব যে বিভাগের তারাই যদি স্ট্রাটেজী নির্ধারনে অংশ না নেয়, তারা যদি তাদের মতামত, আইডিয়া ওখানে শেয়ার না করতে পারে, তা যদি নাই জানে কোম্পানী কোন পথে এগোচ্ছে, তাহলে তারা তাদের পার্টটি কিভাবে করবেন? আপনি যদি বিশ্বাস করেন, বিজনেস ম্যানেজমেন্টে আপনি অন্যান্য জায়ান্টদের পদাঙ্ক অনুসরন করবেন, তাহলে আপনি জেনে রাখুন, জগতের সকল বিখ্যাত ও বিশাল প্রতিষ্ঠান তাদের এইচআরকে যেকোনো স্ট্র্যাটেজিক ডিসিশনের মোস্ট ভাইটাল স্টেকহোল্ডার হিসেবে মনে করে। কোনো গুরুত্বপূর্ন স্ট্র্যাটেজিক সিদ্ধান্ত এইচআরকে ছাড়া নেয়া হয় না। বলতে পারেন, এইচআরতো প্রোডাকশন দেখে না, তারাতো মার্কেটিং করে না, তারাতো সেলসের কাজ জানে না, এইচআর ফাইন্যান্সিয়াল ম্যাটারে জড়িত না।
তাহলে তারা স্ট্র্যাটেজিক ডিসিশনের পার্টনার হয়ে কী লাভ? লাভ আছে। আপনার প্রতিষ্ঠানের যতোগুলো ভাইটাল অরগান আছে, যারা আপনার মতে মূল প্লেয়ার, তাদের সেরা পারফর্ম্যান্স বের করে আনার সবচেয়ে ভাইটাল রোল প্লে করতে হয় এইচআরকে। পাশাপাশি তাদের জব ডেসক্রিপশন দেয়া, মোটিভেশন দেয়া, জব এসেসমেন্ট করা, পারফর্ম্যান্স মেজারমেন্ট করা, রিওয়ার্ড/পানিশমেন্ট করা, এনগেজমেন্ট/এলিমিনেট করা-এগুলো করে এইচআর।
তাই এইচআরকে বেটার এডপশন, বেটার চেঞ্জ ম্যানেজমেন্ট, বেটার এনগেজমেন্ট, বেটার ক্রাইসিস প্ল্যানিং, বেটার সাকসেশন প্ল্যানিং, বেটার বিজনেস ডাইভার্সিটি, বেটার ম্যানপাওয়ার হান্ট, বেটার ট্যালেন্ট রিটেনশন-এককথায় ম্যানপাওয়ারকে আপনার যেকোনো স্ট্র্যাটেজির বাস্তবায়নে কাজে লাগানোর জন্য ওই স্ট্র্যাটেজি নির্ধারনে জড়িত থাকাটা জরুরী।
“HR has a seat in the boardroom.”-Asmaa Saad
Here’s why:
Finance needs HR for:
– Budget planning
– ROI on employee programs
– Cost-saving benefits strategies
Operations relies on HR for:
– Workforce planning
– Training-driven process improvement
– Employee productivity metrics
Marketing collaborates with HR on:
– Employer branding
– Internal communication campaigns
– Employee advocacy programs
Sales partners with HR for:
– Team structure and incentives
– Performance metrics
– Product knowledge training
Tech looks to HR for:
– HR tech stack recommendations
– Workforce data analytics
– Digital upskilling initiatives
Legal depends on HR for:
– Labor law compliance
– Employment risk management
– Policy development
Customer Service needs HR for:
– Customer-centric culture building
– Service quality training
– Employee engagement strategies
HR isn’t just pushing papers. They’re pushing your business forward. By bringing people-focused insights to EVERY decision. So next time you’re in the boardroom…Make sure HR has a seat at the table.
সুলেমান হতে কর্পোরেট লাইফের ও স্ট্রাটেজিক ম্যানেজমেন্টের পাঠ:
দীপ্ত টিভিতে চলমান তুমুল জনপ্রিয় সুলতান সুলেমান অনেকেই দেখেন। আবার অনেকে দেখেন না ‘ওটা মেয়েদের অনুষ্ঠান’ এই অপরাধে। যাহোক, আমি নিয়মিত দেখি। একটি সিরিয়াল হিসেবে না। সত্যি সত্যি সিরিয়ালটি হতে একজন এইচআর কর্মীর অনেক কিছু শেখার আছে। তাছাড়া টিভিতে কিছু একটাতো দেখতে হয়। বাংলাদেশের বিভিন্ন চ্যানেলে যেসব বস্তু দেখায় তাতো দেখার মতো না।
একটি প্রতিষ্ঠান বা রাষ্ট্রের পরিচালনার সাথে সিরিয়ালটি হতে পাওয়া শিক্ষার আমি খুব মিল পাই। আমি আমার চারপাশের ঘটে চলা প্রতিটি ইস্যু হতে কিছু না কিছু শিখি। কথা খুব লম্বা না করে কর্পোরেট লাইফে সিরিয়ালটির হতে কী শেখার আছে তাই বলি।
১.প্রথমা স্ত্রীকে ইগনোর করে নতুন স্ত্রী হুররামকে নিয়ে সুলেমানের ব্যস্ত হয়ে পড়া: কখনো আপনার পরিক্ষীত কর্মীদেরকে কোনো জাজমেন্ট ছাড়া স্রেফ নতুন কোনো আপাতঃ চতুর/ধূর্ত কর্মীর প্ররোচনায় ত্যাগ করা ভুল।
২.শাহজাদা মোস্তফাকে হত্যা: স্রেফ গুজব, কল্পিত আতঙ্ক, প্রিজুডিস আর প্রায় জানা ষড়যন্ত্রের মধ্যেও নিজের সবচেয়ে যোগ্য পূত্র এবং সম্রাজ্যের/প্রতিষ্ঠানের সবচেয়ে যোগ্য উত্তরসূরীকে সরিয়ে দেয়া/কতল করা/টার্মিনেট করা। কর্পোরেটে হরহামেশাই হচ্ছে এমন।
৩.সম্রাজ্যের মধ্যে একাধিক প্রতিদ্বন্দ্বী তৈরী: সুলেমান নিজের মনোরঞ্জনের ভিতর দিয়ে প্রচুর শাহজাদা তৈরী করলেও তাদের মধ্য হতে উত্তরসুরী নির্বাচনের কোনো পারফেক্ট সিস্টেম তৈরী করেননি। ফলে তলোয়ার ও ষড়যন্ত্রই হয়েছে সিংহাসনের উত্তরাধিকারী নির্বাচনের হাতিয়ার। প্রতিষ্ঠানেও উত্তরসূরী নির্বাচনে এই ভুল হয়।
৪.একতরফা বিচার: শাহজাদা মোস্তফাকে নিজ হাতে হত্যা করার পর সুলেমান উপলব্ধি করেন ও জানতে পারেন সে ছিল মিথ্যা অপবাদ ও ষড়যন্ত্রের স্বীকার। কিন্তু ততদিন অনেক দেরী হয়ে যায়। একই ভুল তিনি তার প্রধান সহচর ইব্রাহীমের ক্ষেত্রেও করেন। একই ভুলে তিনি তার সবচেয়ে যোগ্য লোকগুলোকে একে একে হারান। প্রতিষ্ঠানেও একই অবস্থা হয়। ম্যানেজমেন্ট পলিসি ও বসদের ভুলে প্রতিষ্ঠান ছেড়ে যান যোগ্য কর্মীরা।
৫.ব্যক্তির স্বার্থের কাছে সম্রাজ্যের বলী: হুররামের ব্যক্তিগত স্বার্থ’র নির্দয় বলি হন সম্রাজ্যের সবচেয়ে যোগ্য লোকেরা। অটোম্যান সম্রাজ্য হয়ে পড়ে মেধাহীনদের রাজ্য। রাজ্যের সব পদ দখল করে অযোগ্য পদলেহনকারী লোকেরা। যোগ্যতার বদলে আনুগত্য হয়ে পড়ে পদ ও পুরষ্কার পাবার ক্রাইটেরিয়া। কি? কর্পোরেটের সাথে মিল পাচ্ছেন?
৬.প্রচন্ড রকম ব্যক্তি পূজা: সুলতান সুলেমান তার ব্যাক্তিগত সিদ্ধান্ত ও দৃষ্টিভঙ্গিতে প্রচন্ড কর্তৃত্বপরায়ন। সকল কর্মচারী তার সিদ্ধান্তে তেমন ডিবেট করতে পারেন না বা খোলামনে নিজের মতামত জানাতে পারেন না। এতে সুলেমানের কর্তৃত্ব দৃঢ় হলেও তার প্রাজ্ঞ উপদেষ্টা পাবার বা পেলেও তাদের প্রাজ্ঞ মতামত, আইডিয়া পাবার রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। এন্টারপ্রাইজে এমনটাই ঘটে।
৭.অতীতের ভুল হতে শিক্ষা না নেয়া: সুলেমান একটি প্রতিষ্ঠানের মতো। তিনি একদা তার সবচেয়ে যোগ্য উপদেষ্টা, শুভাকাঙ্খি ও বীর সেনাপতিকে স্রেফ অনুমান ও ভুল তথ্যের ভিত্তিতে খুন করিয়ে প্রচন্ড অনুশোচনায় ভোগেন। তিনি একই ভুল পদ্ধতিতে ছেলে মোস্তফাকে খুন করার। এতে প্রতিষ্ঠানের শেখার বিষয় হল, যারা অতীত হতে শিক্ষা নেয় না, তাদের ভাল হয় না।
৮.চকিত সিদ্ধান্ত: সুলেমান তার একসময়কার বিশ্বাসভাজন ও চলমান প্রধান উজির রুস্তমকে মুহূর্তের সিদ্ধান্তে পদচ্যুত করে সাথে সাথে আরেকজনকে প্রধান উজির নিয়োগ করেন। এমন সিদ্ধান্ত গ্রহন প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠানের জন্যও ক্ষতিকর।
৯.আবেগে চলা: শাহজাদা মোস্তফাকে তার চতুর্পাশ্বের অন্তত এক ডজন মানুষ সাবধান করেন যে সুলেমানের তাবুতে গেলে তিনি নিহত হবেন। তিনি স্রেফ বাবার প্রতি অন্ধ আবেগ আর বিশ্বাস হতে সেই নিষেধ শোনেননি। এমনকি তার অতিরিক্ত ভালমানুষি ও সততা তাকে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের মধ্যে না চাইতেও শিকার বানিয়েছে। তার অন্যায় খুন হয়তো আবেগের জন্ম দেয় কিন্তু একই সাথে আরেকটা সত্যকেও নির্দেশ করে। একজন এডমিনিষ্ট্রেটর বা শাহজাদাকে শুধু আবেগ ও নির্মল বিশ্বাস নিয়ে চললেই হয়না। তাকে কৌশলী, চতুর ও সচেতন হতে হয়। তাকে নিয়ে ব্যপক ষড়যন্ত্র হচ্ছে জেনেও তিনি তার বোন মেহরিমার হঠাৎ কোনো কারন ছাড়া আগমন বা বেড়ানো নিয়ে কোনোরকম সাবধান হবার দরকার মনে করেননি। অটোমান সম্রাজ্যের ভবিষ্যত কর্ণধারকে এতটুকু সূক্ষ্নতাবোধ না থাকলে চলে না। একজন এইচআর প্রফেশনাল হিসেবে আমার মনে হয়েছে, মোস্তফার প্রস্থান আরেকটা বিষয় মনে করিয়ে দেয়। বিশাল সম্রাজ্যের/প্রতিষ্ঠানের সম্ভাব্য অধিকর্তা হিসেবে মোস্তফার ভাবাবেগপূর্ণ ও অতি সরলতা যায় না। তাই তার মতো কাঁচা খেলোয়াড়ের হাতে অটোমান সম্রাজ্য না পড়াই বেটার হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের বসদেরও একই নীতি ফলো করা উচিৎ। তারা যেন ভাবাবেগ দ্বারা বা অন্ধ বিশ্বাস দ্বারা চালিত না হন।
১০. সুলেমানের সব সন্তানের মধ্যে সবচেয়ে বাস্তববাদী হল সেলিম। চলমান নানা সমস্যা, আবেগীয় পরিস্থিতি, ভ্রাতৃঘাতি দ্বন্দ্ব-েএতকিছুর মধ্যে সে তার বাকি ৪ ভাইয়ের মতো ভাবাবেগে না চলে একজন সম্রাজ্যবাদী সম্রাটের সন্তানের যেরকমটা হওয়া উচিৎ তেমনটাই হয়েছেন। কর্পোরেটের ব্যক্তিত্বদের এমনই হতে হয়। তাদের কাছে অহেতুক আবেগ কাম্য নয়। বিশেষত কর্মক্ষেত্রে ভাবাবেগ বা খেয়াল খুবই ক্ষতিকর। ১১.সুলেমানের দুই পূত্র বিয়াজিদ ও সেলিমের মধ্যে বরাবরই যোগ্য ও মেধাবী ছিল বিয়াজিদ। অথচ তার সবদিক হতে নিচুতে থাকা সেলিম সবসময় ফলটা ভোগ করেছে। কর্পোরেটের সাথে খুব মিল পাবেন এখানে। তাছাড়া সুলেমানের সবথেকে জ্ঞানী ও বিজ্ঞ শাহজাদা জাহাঙ্গির। অথচ শুধুমাত্র তার শারিরিক ত্রূটির জন্য কেউ তাকে গোণায় ধরে না। মেধা বরাবরই উপেক্ষিত ছিল ওই সম্রাজ্যে। আমাদের দেশে কর্পোরেটে মেধা সবচেয়ে অবহেলিত এক ইস্যু। এখানে দাম আছে এক্সপোজারের, এক্সিবিশনের। চুপচাপ যারা মেধা দিয়ে চলে তাদের বিবেচনা করা হয় অকর্মন্য হিসেবে।
#strategicdecionmaking #strategy&HR #HRBP