I know, I could not make you get me what I deserve.
But, be assured, I will make you congratulate me, for the reward I deserve.
১৯৮ দিন। ১৫.১ কেজি হ্রাস। প্রাথমিক টারগেট ৭৫ কেজি এবং ফাইনাল টারগেট ৭২ কেজি।
Achieved
আগের ফিট প্যান্টগুলো ঢোলা পাজামায় পরিণত হয়েছে। কেউ চাইলে সস্তায় জিন্স পাবার সোর্স শেয়ার করতে পারেন। নতুন করে প্যান্ট কিনতে হবে যে।
প্রাথমিক টারগেট করেছিলাম ৮৭ হতে ৭৫ তে নামব। করেছি।
আলটিমেট টারগেট ৭২ কেজিতে স্থির হওয়া। ১৯৮ তম দিনের মাথায় সেটাও হিট করেছি।
একটা পৈশাচিক সুখ অনুভূত হচ্ছে। সারাক্ষণ মনে হচ্ছে বাতাসে ভাসছি। ১০ কিলোমিটার দূরত্বের যেকোনো স্থানে এখন হেঁটে চলে যাওয়া কোনো কিছুই মনে হয় না। ফেটিগ কমে গেছে। কমে গেছে ওজন জনিত পায়ের ব্যথা। কমে গেছে কুৎসিত নাক ডাকা।
বিজ্ঞজনেরা বলেন, সব সফল পুরুষের পিছনেই একজন নারী থাকেন। দুর্মূখেরা তবু বলে, সব নারী কেবলমাত্র সফল পুরুষের পিছনেই দৌড়ান, তাইতে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে আনার ড্রাইভের শুরু আমার গরজে না। বেশ কিছু মাস ধরে আতঙ্কজনকভাবে নাক ডাকার সমস্যা দেখা দিয়েছিল। নানা ঘাঁইকিচিং করবার পরে বুঝতে পারলাম, সমস্যার গোড়া হল বিপুল ওজন, যা গত বছরের শুরুতে ৯০ কেজিতে ঠেকেছিল।
নিটোল চিকিৎসা নেবার, ডিভাইস কেনার, জিমে যাবার জন্য প্রাণ ভাজা ভাজা করে ফেলছিল। ভয়ঙ্কর হল, নিজের নাক ডাকার শব্দে নিজেই ঘুম ভেঙে জেগে যেতাম। নিটোল ভয় পাচ্ছিল, স্লিপ এপনিয়ায় কবে ঘুমের মধ্যে আমার হার্ট এ্যটাক হয়। রাতে ঘুম না হওয়ায় দিনের স্টামিনা, কাজ, উদ্যম, সুস্থতায় প্রভাব পড়তে থাকে।
আমরা বুঝতে পারি, ওজন বৃদ্ধি হওয়ায় চিক ও নেকের মাসল, ফ্যাট বেড়ে গিয়ে স্লিপ এপনিয়াতে প্রভাব বেড়েছে। আর দেখতে যে আমি বেঢপ হয়ে পড়েছি, সেটা দিনের মধ্যে একশোবার না হলেও ৩৭ বার শুনতে হত।
শেষ তক যখন শুনবই না, তখন সে জিমে পাঠানোর জন্য নিজে ভর্তি হয়ে আমাকে যেতে বাধ্য করবে-এমন হুমকী দিতে শুরু করায়, ওয়ান ফাইন মর্নিং আমি শুরু করলাম। ১ জানুয়ারি ২০২৩। টারগেট হিট ১৮ জুলাই ২০২৩।
আজ সকালে আমি ৭১.৭ কেজির পাটকাঠি। জিও বেটা। জিও।
তবে স্লিম হয়ে সুরতে জেল্লা ও ক্যরিশমা এসেছে-এটা ভাবলে ভুল হবে। মনুষ্য চেহারা কেলিয়ে ও ভচকিয়ে গিয়েছে। কিছুটা ক্যাবলাকান্ত আগেও ছিলাম। এবার ছ্যাবলাকান্ত নামটাও যোগ হবে। হন্টনকালীন তোলা এই ছবি দ্রস্টব্য।
তবে হালকা শরীর রীতিমতো এনজয় করছি। আলহামদুলিল্লাহ। ধন্যবাদ নিটোলকেও।
কীভাবে কী করেছি, তা পোস্ট এডিট করে লিখবার এরাদা আছে। আমার তরিকাকে বৈজ্ঞানিক পন্থা মনে করলে ঠকবেন। ফলো করলে মরবেন।
আর, আমি মনে করি না, মোটা হওয়া কাউকে বডি শেমিং করা কোনো ভদ্রচিত কাজ। কখনো কাউকে দেখা হলে বলবেন না,
“তুমি তো মোটা হয়ে গেছ।”
আমি যদি কখনো কাউকে ভুলে বলে থাকি, স্যরি।
আমার মনে হয়েছে, জীবনে ক্যারিয়ারসহ, সবকিছুতেই, ডেসপারেশন, লক্ষ্যভেদী পরিশ্রম, ডিটারমিনেশনই সব। এই গল্পটা আসলে নিজেকে নিজের কাছে জিতিয়ে আনার রূপক হিসেবে লিখেছি।
এটা বলতে, যে, আপনি চাইলেই পারবেন। ইনশা-আল্লহ।
কী কী করেছিলাম?
১. ওজন কমাবার জন্য, বা যে কোনো কিছু পাবার জন্য ১ নম্বর বটিকা হল ডেসপারেশন, ডিটারমিনেশন, প্ল্যান ও প্রোগ্রাম। সেটি বানিয়ে নিয়েছি। রীতিমতো কাগজে-কলমে, অংক কষে। ঘুম ভাঙার পর কত ওজন থাকবে, দিন শেষে কত নিয়ে ফিরব, রাতে ঘুমোনোর সময় কত করতে হবে-তার টারগেট ছিল।
আমার কাছে রীতিমতো প্রচলিত সব খাবারের পরিমান ভিত্তিক ক্যালোরির একটা তালিকাও আছে। প্রতিদিন আমি কতটুকু পানি পান করি-তারও ডাটা রাখি। প্রতিদিন কয়েকবার ভিন্ন ভিন্ন মোডে ওজন মেপে তার রেকর্ড রেখেছি। তবে যেই মোডেই হোক, সেটি রোজ একই ফরমে।
২. দিনে ১ বার ভাত/রুটি, ২৫০ গ্রামের বেশি নয়, সেটি সকালে হলে সবচেয়ে ভাল হয়। তবে আমি রাতে খেতাম। ভাত বা রুটি না খেয়ে আবার আলু, ময়দা, পুরি, সিঙারা, বিস্কুট, মুড়ি, চিড়া, খই, কর্ণ, ছাতু, কচু-এসব খেতে যাবেন না। মোদ্দা কথা, সারাদিনে মাত্র ১ বার ২৫০ গ্রাম কার্ব ইনটেক। সেটা যেই খানা দিয়েই হোক।
৩. দিনে ২টি মিল। সকাল ও দুপুর হলে বেস্ট। আমি সকাল ১০ টা ও রাত ৯ টা করে নিয়েছি। মিল মানে, ওই যে, রাতে ভাত, কারি, সবজি। সকাল দশটায় ১ বাটি সবজি বা শাক ও ফল। বাকি সময় যে সমানে টুকটাক খেতেই থাকবেন-তা হবে না। প্রসেসড ফুড হারাম জেনেছি। শবে বরাতে হালুয়া চাখিনি, প্রিন্সের মোলায়েম বান গায়ে মাখিনি।
হ্যা, যেই জিনিস খুবই পুওর ইন ক্যালোরী-সেটা খেতে পারেন। আমি প্ল্যানের বাইরে প্রায় খেতামই না। কোরবাণীর ইদে ৭ দিনের ছুটিতে ১ কেজি মাংসও হবে না। রোজার ইদে ২ বাটি সেমাই মাত্র। টুকটাক খেলেও শসা, পেয়ারা, টমেটো, বিট, গাজর খেতাম।
খুব কম ক্যালোরির কিছু খাবার, যা খেয়ে পেট ভরে রাখা যায়-পানি, আনারস, কমলা, খেজুর, গাজর, চিনি, গুড়, জাম, টমেটো, ডিম, তরমুজ, পেপে, পেয়ারা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন, মধু, মিক্সড সবজি, কুমড়া, মিষ্টি আলু, লাল আটার রুটি, শসা, শালগম, কলা। চিনি ও গুড় লো ক্যলোরি শুনে আঁতকে উঠবেন না। ১ চামচ চিনি বা গুড়ে ক্যলোরি খুব কম। সমস্যা হয়, যদি অসংখ্য চামচ খান।
আমি শীতের পুরো ৪ মাস প্রতিদিন টনকে টন টমেটো খেয়েছি। টমেটো দ্রূত ফ্যাট কমায়। টমেটো ও শসা একসাথে খাবেন না। খালি পেটে শসা খেলে গোলাপের সুগন্ধ ছড়াতে বাধ্য হবেন।
৪. সকালে ১-১:১৫ ঘন্টা ও ৬-৮ কিলোমিটার হাঁটা। দিনের বাকি সময় মিলিয়ে রোজ প্রায় ১০-১১ কিমি হাঁটা। রাতে খাবার পরে ১ কিমি। খাবার পরে শুয়ে বা বসে না থেকে মুভমেন্ট করা। খেয়েই ভরা পেটে ঘুমিয়ে না পড়া।
৪. প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ১ মগ ডিটক্স ওয়াটার। হালকা গরম পানি, পিংক সলট, অর্ধেক লেবুর রস, সামান্য আদা বাটা, দুই চা চামচ মধু, ১ চামচ চিয়া সিড বা তোকমা দানা, ১ চামচ ইসুবগুল ভুষি-সবসহ খাওয়া। সাথে ১ টি রসুন কোয়া (চিবিয়ে)।
৫. এই সময়টাতে (১৯৮ দিন) নো সুগার নীতি মেনে চলেছি। নো মানে না, মুরগী তোর মা।
চায়ে না, মিষ্টান্নতে না, ঘোপেঘাপেও না। জিরোক্যাল নামের বিষও না। এই ১৯৮ দিন কুৎসিত চা খেয়েছি। না পারলে কফি। তবে সবুজ চা নামের সবুজ বিষ খাওয়ার সাহস করিনি। তবে হ্যা, শরীরে সামান্য সুগারেরও দরকার আছে। তাই সামান্য খেতে ভুলবেন না। জিরো সুগার দীর্ঘমেয়াদে করলে ক্ষতি হবে। তবে ইচ্ছেমতো মিস্টি খেয়ে যেতে চাইলে স্টেভিয়া পাতা কিনে নিন। চিনির নিরাপদ বিকল্প শুধুমাত্র সেটা। স্যকারিন বা জিরোক্যল না।
৬. দাওয়াত, জাংক ফুড, স্ট্রিড ফুড নামের গারবেজ সব কোরবাণ করেছি। একদিন খা, এটুকু খেলে মোটা হয়ে যাবি না, আজ গরুর গোস করেছি, আজ খাও, কাল হতে আর খেও না-এসব বায়নাকে গুলি।
৭. প্রতিদিন কমপক্ষে ৬ ঘন্টা ঘুম, এবং সেটা নির্ধারিত সময়েই। আগে পরে করে না।
৮. সকালে হাঁটলে রাতে এক্সারসাইজ (বেশিরভাগটাই এ্যবসের)। সকালে এক্সারসাইজ করলে রাতে হাঁটা। অলটারনেটিভ করেছি। বাইরে বৃষ্টি হলে ঘরে হেঁটে পূরণ করেছি। মোবাইলে হিসেব রেখেছি, কত কিমি হাঁটলাম।
৯. দিনে একবার মূল কারির খানা (আমি রাতে করেছি, যেহেতু সারাদিনে আমরা দু’জন ওই সময়টাই একসাথে খাবার উপলক্ষ্য হত।) ২৫০ গ্রাম বা ১ কাপ ভাত/রুটি, মাছ অথবা মাংস, সবজি অথবা শাক। কখনো কখনো সকালে ১ টা ডিম বা রাতে ১ গ্লাস দুধ। ক্যজুয়ালী। মাছ খেলে স্ট্যান্ডার্ড ১ টুকরো, মাংস হলেও ১ টুকরোই। ঘরে বা দাওয়াতে বা আত্মীয়দের বাসায় মাগনা গরুর মাংস পেলে ৩ বাটি উড়িয়ে দেয়া চলবে না। আমরা খাওয়ার জন্য বাঁচি না, বাঁচার জন্য খাই।
এমনিতে, খাওয়া ও পরা-আমার পছন্দের কাজ না। পড়া অবশ্য পছন্দের। সেটা কিন্তু, লেখা পড়ার কথা বলেছি। আবার ডিম পড়া, তেল পড়া না।
১০. সারাদিনে ২.৫ লিটার পানি। সেটা ৩ মগ চা/কফি ও সাদা পানিসহ। মোবাইলে হিসেব রাখতাম।
১১. মোদ্দা কথা, কার্বোহাইড্রেট, সুগার, অয়েল, জাংক ফুড কমিয়ে ইনটেক করা। প্রতিদিন যতটা ক্যালোরী খাবেন, পোড়াতে হবে তার চেয়ে বেশি-এটাই হল ওজন কমানোর বিশ্বজনীন ম্যাজিক। মনে রাখবেন, না খেয়ে থাকলে ওজন কমে না। বরং বাড়ে। গ্যাসট্রিকে আক্রান্ত হবেন ফাও।
১২. এই সবকিছুর সাথে সাথে নিয়ম করে বউয়ের ও বসের ঝাড়ি এপেটাইজার বা ডেজার্ট হিসেবে নিয়মিত খাবেন।
সাবধানতা হল, ফেসবুকে ২৪ ঘন্টায় শিল্পাশেঠী কোমর করে দেবার চটকদার বিজ্ঞাপন দেখে ঝাঁপাবেন না।
#weightloss #health #Lifestyle #exercise #workout