Skip to content

মিথ্যা তুমি দশ পিপড়া: রাইট রঙের ভুল ভুলাইয়া

পবিত্র মিথ্যা:

তুমি সত্য বলতে চাও বা মিথ্যা, যেটাই হোক, তারপরও, তোমাকে আগে সত্যটা জানতে হবে। সত্য বলতে হলে তো সত্যটা জানতেই হবে। মিথ্যাও যদি বলতে চাও, তাহলেও আগে তোমাকে সত্যটা জানতে হবে। তা না হলে, মানে, সত্যটা না জেনে যদি তুমি মিথ্যাটা বলো, সেটা আর মিথ্যাও থাকে না, সেটা তখন বিভ্রম হয়ে যায়। যা মিথ্যার চেয়েও খারাপ।

বেশ কিছু মাস আগে ‘পবিত্র মিথ্যা’ নামে একটি কাল্পনিক শব্দ ব্যবহার করেছিলাম আমার একটি পোস্টে। এক ভদ্রলোক জানতে চেয়েছিলেন, পবিত্র মিথ্যা আবার কী বিষয়।

ওনাকে, বা, অনেককে জানাবার জন্যেই আজ নিচের গল্পটি কপি/পেস্ট করা।

জ্বি, সামাজিক মাধ্যমে, বিশেষত, ফেসবুক নামক ফেকবুকে এরকম হাজার হাজার, লাখ লাখ ফেসবুক নীতিগদ্য ঘুরে বেড়ায়। সেগুলো কে, কবে, কেন, কোথায় লিখেছিলেন, কেউ জানে না। প্রায় সবার লেখক তালিকায় একজনের নাম থাকে-মি. কালেকটর।

জ্বি, ওই নীতিগদ্যগুলোর প্রায় সিংহভাগই কোনো না কোনো মহান ব্যক্তিত্বের বরাতে লেখা। রবী ঠাকুর হতে রতি ঠাকুর-কেউ ই বাদ যান না ওসব গল্পের বৃন্দে হতে।

এই লাইনে সবচেয়ে সেলেব্রিটি কয়েকজন আছেন-প্রয়াত জনাব আবুল কালাম তথা মিজাইল কালাম, জনৈক কুয়েতি লেখক, প্রাক্তন গভর্নর, অমিতাভ বচ্চন, টাটাজি প্রমূখ।

জ্বি, এই **‘বানোয়াট’ গল্পগুলোর কুশিলব বানানো হয় ওনাদের। ‘বানোয়াট’ বলছি, কারন, প্রচুর সম্ভাবনা আছে, যে, ওগুলোর কুশিলব আদৌ ওনারা না। সেজন্যই এমনকি এই গল্পও নেটে ভাসে-

”তোরা সব **’বানোয়াট’ গল্প লিখে রবীন্দ্রনাথ, আবুল কালামের বাণী হিসেবে চালানো বন্ধ কর।—-বাণীতে কাজি নজরুল ইসলাম।”

 ওগুলো সত্যিই ওনাদের গল্প কিনা-কেউ জানে না। কেউ জানবারও চেষ্টা করে না।

কারন, ওগুলোর সত্যতা জানার চেয়ে ওগুলোর মেসেজটা বেশি তাৎপর্যপূর্ণ। আমি সেটাতেই ফোকাস করছি।

এই গল্পগুলোই হল আমার সেই বর্ণিত ‘পবিত্র মিথ্যা”।

গল্পগুলো সত্যিই ওনাদের জীবনের গল্প কিনা, সেগুলো কে লিখেছেন, কে নিজের নামে চালাচ্ছেন, গল্পটা ওনাদের হলেও সেটা কতটা রং চড়ানো, কতটা অতি কথন-সেটা এখানে গুরুত্বপূর্ণ নয়।

গল্পের মেসেজগুলো হয় খুবই চমৎকার, তাৎপর্যপূর্ণ, মনোঃমুগ্ধকর।

সেজন্যই এই **‘বানোয়াট’ গল্পগুলো আমার খুবই প্রিয়। ওই গল্পগুলো আমাকে বারবার বলে দেয়, ভুলে গেলে মনে করিয়ে দেয়, আমি আমাকে কেমন দেখতে চাই। নিজেকে যেন ভুলে না যাই, নিজের কাছে নিজের শপথ যেন ভুলে না যাই-তার লাইফলাইন ওই ফেসবুক নীতিগদ্য।

আজ আপনাদের তেমনই একটি নীতিগদ্য শেয়ার করব। গল্পটি আমি সংগ্রহ করেছি মি. Javed Momen এর দেয়াল হতে। আর আরেক যায়গায় গল্পের নিচে বলা ছিল, যে, এটি আনন্দবাজারের একটি ফিচার। পড়ুন। মুগ্ধ হবেন। ঋদ্ধ হবেন।

মূল পোস্টে না থাকলেও নেট হতে বহুল জনপ্রিয় মিজ সুধার একটি ছবি আমি নিয়েছি, যেই ছবিতে তাকে একদমই ভুলভাবে আরেকদল মানুষ অবতার হিসেবে প্রতিপন্ন করেছিল। আবারও সেই একই কথা, পবিত্র মিথ্যা। মিজ সুধা অনেক দিন বাদে সেই মিথ্যার জাল নিজ হাতে ছিড়ে দেন। একজন সত্যিকারের মহান মানুষ, যে, তাকে ঘিরে রচিত মহানত্বের মিথ্যা ফানুসকেও রেহাই দেন না। ছবিতে তাকে বিনয়ের অবতার হিসেবে দেখিয়ে জনৈক ব্যক্তি যে ছবিটি ভুল টুইট করেছিলেন, সেটি ও মিজ সুধা কর্তৃক তাকে পরে ভুল প্রতিপন্ন করা পোস্টের লিংকটা দিলাম। সময় থাকলে পড়বেন।

https://www.news18.com/…/fact-check-does-sudha-murthy…

এমন একজন মানুষ হতে পারলে বর্তে যেতাম।

।।–।।

——————“ক্লাস”————

সুধা নারায়ানামুর্তি’র একটি ইন্টারভিউ..

**************************

*ডাক্তারের কন্যা, একেবারেই* *মধ্যবিত্ত পরিবারে  বড় হয়েছেন । নারায়ানামুর্তি যখন সুধা’কে বিয়ে করেন, তখন তিনি বেকার । চাকরি বাকরি* *কিছু করেন না ।  সুধা’কে তাঁর বাবা জিজ্ঞেস করেন  ” আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব দের কাছে বেকার জামাই এর পরিচয় কি করে দেবো ??”*

*সুধা বাবাকে বললেন*

*”বোলো এ সুধার স্বামী” !!*

*এর কিছুদিন পরে নারায়ণমুর্তি সুধা’কে বলেন  তিনি একটি আই.টি কোম্পানি খুলতে চান, কারন খাঁটি  ভারতীয় কোনো আই.টি কোম্পানি তখন এদেশে খুব দরকার ।  নারায়াণমুর্তি সুধা’কে আরও বলেন “আগামী তিন বছর আমি তোমাকে সংসার চালানোর কোনো খরচা দিতে পারবো না । সংসার তোমার রোজগারেই চালাতে হবে, উল্টে,..এই কোম্পানি খোলার জন্য তোমাকেই আমাকে সাহায্য করতে হবে “।*

*সুধা একটি ছোট্ট টিনের বাস্কে কিছু টাকা জমিয়েছিলেন মোট দশ হাজার দু’শো পঞ্চাশ  টাকা ।*

*সুধার ভাষায় ” দু’শো পঞ্চাশ টাকা এমার্জেন্সি’র জন্য রেখে,  বাকী দশ হাজার আমি ওকে লোন দিয়েছিলাম  “।*

*শুরু হলো –” ইনফোসিস”*

*”ইনফোসিস” এর যখন স্বর্ণযুগ চলছে, নারায়ণমুর্তি স্ত্রী’কে এক কোটি টাকা দিতে চেয়েছিলেন ।  সুধা তাঁকে বললেন –” ফেরত দিতে চাইলে, ওই দশ হাজার-ই ফেরত দাও…!! তোমার লাগলে, আবার ধার দেবো ।  আর যে এক কোটি আমাকে দিতে চাইছো, সেটা মাদার টেরিজা’ কে পাঠিয়ে দাও ।”*

*তখন ভারতবর্ষের সবথেকে বড় আই.টি কোম্পানি ইনফোসিস এর মালিকের স্ত্রী সুধা । কিন্তু  “ক্লাস” তো তৈরী হয়নি তাঁর..!!!*

*সাধারণ কম দামী শাড়ী, সাধারণ কথাবার্তা,  সাধারণ মানুষ জনে’র সাথে মেলামেশা  । ঠাঁট-বাট ই নেই, কলেজে পড়ান, পায়ে হেঁটে বা ফিয়াট ট্যাক্সি চেপে ঘুরে বেড়ান..। নিজেকে তৈরী করেন নি এলিট-ক্লাসে’র জন্য  !!*

*কিছুদিন আগে ব্রিটেন যেতে* *গিয়ে প্রথম সমস্যা হলো মেয়ে লন্ডন   থেকে “বিজনেস ক্লাস” এর টিকিট পাঠিয়েছিল।* *বোর্ডিং পাশ হাতে নিয়ে “বিজনেস ক্লাসের” লাইনে দাঁড়াতে  পিছনের ব্রিটিশ দম্পতি বললেন,*

*”ম্যাডাম, আপনি ভুল লাইনে দাঁড়িয়েছেন, এটা বিজনেস ক্লাসে’র লাইন ।* *”ইকোনমি-ক্লাস” টা ঐ দিকে “। পাশ থেকে ভদ্রলোকের স্ত্রী তির্যক মন্তব্য করলেন –” ক্যাটেল ক্লাস বলো, তাহলে ভালো  বুঝতে পারবে”..!!!*

*প্লেনে উঠে সুধা দেখলেন বিজনেস ক্লাসে, তাঁর পাশেই সিট পড়েছে সেই দম্পতির ।  সুধা আর লোভ সামলাতে পারলেন না…!!  উঠে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন ” ক্লাস বলতে তোমরা কি বোঝাতে চাও..??? মাদার টেরিজা হচ্ছেন “ক্লাস” । পন্ডিত রবিশংকর হচ্ছেন “ক্লাস” । অ্যালবার্ট আইন্সটাইন হচ্ছেন “ক্লাস”…!! এইটুকু ছোট্ট প্লেনের আবার ” ক্লাস” হয় নাকি…???”*

*পরের বিপত্তি হলো হীথরো এয়ারপোর্টে নেমে । ইমিগ্রেশন  বিভাগের অফিসার সুধা’কে জিজ্ঞেস করলেন  ” আপনি লন্ডনে কোথায় উঠবেন, ফর্মে লিখে দিন ” ।*

*সুধা ফর্মে লিখলেন –” ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিট “…!!*

*অফিসার বললেন –“আর ইউ কিডিং উইথ মি..”!!!*

*সিকিউরিটি গার্ড’রা এগিয়ে এলো !!  সে এক ঝামেলা…. ব্রিটিশরা কিছুতেই বিশ্বাস করতে চায় না –তাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই সাধাসিধে মহিলার জামাই !!!*

*এই হচ্ছে সুধার –” ক্লাস “..!!*

*ইন্টারভিউ এর শেষে সুধা বলেন –” আমি ভালো আছি কারণ — অসহায় ও গরীব মানুষদের সাহায্য করে আমি মানসিক শান্তি পাই ! কেউ যদি বলে আমি চ্যারিটি করছি, তবে সেটা ভুল ।  “চ্যারিটি” বলে কিছু হয় না । আমি যেটুকু যা করতে পারছি  — সেটা সমাজের প্রতি আমার কর্তব্য । ডিউটি শুধু নিজের পরিবারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় ।  সমাজের প্রতিও আমাদের ডিউটি আছে “।*

*এটা সুধার নিজস্ব ” ক্লাস”…!!

রাইট রঙের ভুল ভুলাইয়া:

ইংরেজিতে Mistake ও Wrong দু’টো শব্দ আছে। এক অর্থে দু’টোরই মিনিং এক-ভুল। তবে ভাল করে দেখলে দেখবেন, দু’টো দু’রকমের ভুল। Mistake হল অনিচ্ছাকৃত ভুল বা কাজ করতে গিয়ে হঠাৎ হওয়া বিচ্ছিন্ন ভুল যার পেছনে কোনো ইনটেনশন কাজ করেনি। আর Wrong হল সেই ভুল যা ইনটেশনালি করা বা বারবার একই ভুল করা বা ইচ্ছা করে কোনো ভুল করা। সোজা কথায় বললে, Wrong মানে ভুল না, অন্যায়।

একটা হল ভুলক্রমে কোনো কাজ করা যেমন-আমি ভুলে আমার ব্যাগটা ফেলে গেছি। আর আরেকটা হল অন্যায়স্বরুপ কোনো কাজ করা-যেমন-আপনি এতিমের হক নষ্ট করছেন, আপনি ভুল করছেন।

পৃথিবীতে লিগ্যাল ও এথিক্যাল এবং ইলিগ্যাল ও আনএথিক্যাল এই চারটি বিপরীতধর্মী বিষয় আছে। অনেক বিষয় আছে যা লিগ্যাল কিন্তু আনএথিক্যাল। আবার অনেক কাজ ইলিগ্যাল কিন্তু এথিক্যাল। একজন পথশিশু রাস্তায় ক্ষুধার জ্বালায় দোকান হতে একটি বনরুটি চুরি করল। এটিকে কী বলবেন-ইলিগ্যাল বাট ইথিক্যাল নাকি আনইথিক্যাল বাট লিগ্যাল?

’৯০ এর দশক জুড়ে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে রাস্তায় মানুষের আন্দোলন দমাতে পুলিশ গুলি ছুড়েছে, মানুষ মরেছে। পুলিশ রাষ্ট্রীয় কর্মচারী হিসেবে তার উর্দ্ধতনের আদেশে গুলি করেছে। ওই কাজটা কি লিগ্যাল বাট আনএথিক্যাল নাকি লিগ্যাল ও এথিক্যাল? যেই মানুষেরা স্বৈরাচার হটাতে রাস্তায় ঢিল ছুড়েছেন বা গাড়ির গ্লাস ভেঙেছেন তারা কী ধরনের কাজ করেছেন-ইলিগ্যাল বা ইথিক্যাল নাকি ইলিগ্যাল ও আনইথিক্যাল?

দুইরকম ভুল আছে-ভুল হওয়া আর……… ভুল করা। একটা হল ভুলক্রমে কোনো কাজ করা যেমন-আমি ভুলে আমার ব্যাগটা ফেলে গেছি। আর আরেকটা হল অন্যায়স্বরুপ কোনো কাজ করা-যেমন-আপনি এতিমের হক নষ্ট করছেন, আপনি ভুল করছেন। হোয়াইট কলার জব ও Blue কলার জব যেমন আছে তেমনি হোয়াইট কলার ক্রাইম ও Blue কলার ক্রাইম আছে।

একজন রিক্সাওয়ালা দ্রূত যাবার তাড়ায় রাস্তার ট্রাফিক আইন ভেঙে ডানের রাস্তা দিয়ে গেল। আর একজন সচিব সাহেব শালির বিয়েতে জয়েন করার তাড়ায় তার নিশান জিপ নিয়ে রাস্তার ডানে উল্টো পথে গেল। কোনটা হোয়াইট কলার আর কোনটা Blue কলার ক্রাইম হবে?

মাথা ঘুরছে কি? এ জীবনের পাতায় পাতায় যা লেখা সবই ভুল।

দুনিয়াতে দুইটা অত্যন্ত জনপ্রিয় ও প্রচলিত মিথ্যা কথা আছে।

এক:

সবাই বলবে আমি প্রশংসা একদম পছন্দ করি না। মিথ্যা কথা। মুখে বললেও সবাইই প্রশংসায় বিগলিত হয়। মনে মনে খুশি হয়। প্রমান চান? তাহলে খেয়াল করেন, কারো প্রশংসা করলে কখনো দেখছেন তা অস্বীকার করতে? বা তার ব্যখ্যা দিতে? প্রশংসা করার পর গালের রংটা দেখছেন?

দুই:

সবাই বলবে আমি সমালোচনা অত্যন্ত পছন্দ করি। আমার সমালোচনা কর। ডাহা মিথ্যা কথা। দুনিয়াতে কেউ নিজের সমালোচনা সহ্য করতে পারে না। সামনে যাই বলুক। মনে মনে সমালোচকের গুষ্টি উদ্ধার করতে ছাড়ে না। আর আপনি সমালোচনা করলে তার ব্যখ্যা দিতে যায় না এমন কাউরে দেখছেন? হাচরাইয়া পাচরাইয়া একটা ব্যখ্যা দেবেই। আর তখন চোখের দৃষ্টিটা খেয়াল করে দেখবেন। শালার দুনিয়া। বাঙালি সমালোচনা সহ্য করতে পারে না।  ইন ফ্যাক্ট, বাঙালি শুদ্ধভাবে সমালোচনা করতেও পারে না।

একজন সদ্যোজাত মানব শিশু তার জীনে উত্তরাধিকার সূত্রে কিছু মৌলিক ইন্সটিঙ্কট নিয়ে আসে। বাকিটা সে জন্মের প্রথম প্রহর হতে শুরু করে বাকি জীবনে শেখে। মাফ করবেন, প্রচলিত ধ্যান ধারনা আর লুতুপুুতু সামাজিক মীথকে আমি খুব একটা পাত্তা দিই না।

জন্মের পর হতে মানব শিশু মিথ্যা কথা বলা শেখে কার কাছ থেকে? বাবা-মা’র থেকে সবার আগে। কীভাবে? বাচ্চার কান্না থামাতে, বাচ্চাকে খাওয়াতে, বাচ্চাকে ঘুম পাড়াতে, বাচ্চাকে ভয় দেখাতে, বাচ্চাকে বাধ্যগত রাখতে তারা প্রচুর মিথ্যার আশ্রয় নেন। যেমন:-বাবু, ঘুমাও। তা না হলে একটা মামদো ভূত এসে ধরে নিয়ে যাবে। অথবা, বাবু, তাড়াতাড়ি খাও। তা না হলে, একটা ব্যঙ এসে সব খেয়ে নেবে। মামদো ভূতটা কোত্থেকে আসবে ভাই ও বুবুজান? মিথ্যা শেখার সেই শুরু।

এরপর আছে সারাজীবনব্যাপী মিথ্যা। ফ্রেবুয়ারী মাস। জাতে ওঠার ও সেলফী তোলার জন্য আমরা বইমেলায় যাব। এখানেও মিথ্যা। কীভাবে? মেলায় আসা শিশুকে টিভি রিপোর্টার ক্যামেরা ধরে জিজ্ঞেস করবেন, ’বাবু, বলো তে, তোমার প্রিয় কবি কে? অথবা, তুমি কার বই কিনলে?” বাবু বলবে (আসলে বাবা-মা শিখিয়ে দেবে), “আমি রবীন্দ্রনাথের/নজরুলের/শামসুর রাহমানের/হুমায়ুন আহমেদের/সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের লেখা পছন্দ করি। তার বই কিনব।”

মিথ্যা ও শেখানো কথা। তাকে ওনাদের একটা কবিতা জিজ্ঞেস করুন। আবৃত্তি করবে, টুইঙ্কল টুইঙ্কল লিটল স্টার………………….।

ভাষা নিয়ে, ভাষার মাস নিয়ে, অমর একুশ নিয়েও মিথ্যার বেসাতি বাবা-মায়ের। বড় হয়ে আপনার ’বাবু’ যদি ইয়াবা কেনার পয়সা চাইতে গিয়ে আপনাকে বলে, “আম্মু, বায়োকেমিক্যাল হিস্ট্রির একটা নোট বই কিনতে হবে, টাকা দাও”, আপনার মন খারাপ হবে?

একটা শোনা গল্প, সত্য নাও হতে পারে। গ্যালিলিও যখন আবিষ্কার ও প্রচার করা শুরু করেন যে সূর্য স্থীর এবং পৃথিবী তার চারিদিকে ঘোরে তখন সমাজপতি ও যাজকরা নিজেদের কর্তৃত্ব হারানোর ভয়ে তাকে ধরে এনে প্রাণদন্ডের ভয় দেখিয়ে তাকে প্রকাশ্য জনসভায় বলতে বাধ্য করে যে,”না, আমি ভুল বলেছি। পৃথিবী স্থীর, সূর্য তার চারিদিকে ঘোরে।”

তখনকার দিনে যাজক ও তাদের বশংবদ রাজা প্রচার করত যে পৃথিবী স্থীর, সূর্য তার চারিদিকে ঘোরে।তো গ্যালিলিও প্রাণ বাচানোর জন্য এটা ঘোষনা করলেও মুক্তি পেয়ে মাটিতে পা দিয়ে জোরে ৩বার পদাঘাত করে ফিসফিস করে বললেন, “তবুও আমি বলব, সূর্য স্থীর, পৃথিবী ঘোরে”। পবিত্র মিথ্যার একটা উদাহরণ মাত্র। যদি গল্পটা মিথ্যাও হয়, তবু বিষয় হল-নতুন এবং আমাদের নিজেদের অজানা বিষয়কে আমরা সহজভাবে নিতে পারিনা। তবে সময়ের সাথে যখন আমাদের জ্ঞানের পরিবর্তন ঘটে তখন অনেক কিছুই করা বা মানা সহজ হয়। তাই অন্ধকার দূর করার জন্য (জ্ঞানের) আলো জ্বালবার চেয়ে ভাল উপায় আর হয় না।

#sacredlie #divinelie #mistake #wrong #whitecollar #bluecollar #error #flattering #criticism #parenthood #children #truth #majority #compromise #মিথ্যাবাদীতারসূচনা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *