Skip to content

ঝিঁ কে মেরে বউকে শেখানো: ডিজিটাল ভার্সন

দিন বদলেছে।

আগের দিনে বউয়ের সাথে ঝগড়া করলে পুরুষ মানুষ ছেলে বা মেয়ের ভায়া হয়ে বউয়ের সাথে কথা বলত। তবে আজকাল পুরুষ মানুষ বউয়ের সাথে ঝগড়া করার সাহস পায় কিনা-আমার সন্দেহ আছে। হ্যা, পুরুষের মতো সুপুরুষ হলে ভিন্ন হিসাব। সুপুরুষ কে-বলতে গেলে চাকরি থাকবে না। 

ওদিকে, জামাইয়ের সাথে ঝগড়া হলে বউরা বাসার কাজের মেয়েটাকে পেটাতো। নিজের ছেলেকে, “যেমন বাপ, তেমন ছেলে” বলে ঝাড়ত।

যামানা পাল্টেছে।

এই ডিজিটাল জামানায় কোনো মানুষ যদি তার অপছন্দের কাউকে পঁচাতে চান, কাউকে বকা দিতে চান, কাউকে আচ্ছামতো তুলোধুনো করতে চান, অথবা, কাউকে সরাসরি না বলে তাকে সংশোধন বা সাবধান অথবা তার আকাম কুকামের প্রতিবাদ করতে চান, তাহলে কী করেন?    কী করেন, কী করেন? তাকে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেন।

জ্বালাময়ী পোস্ট, জালালী পোস্ট। এই এক দারুন মজা।

তার ওপরে যে জন্য বিলা, তার যেই কাজে আপনি বিলা, সেটা নিয়ে জ্বালাময়ী কিছু একটা ফরমাইয়া দিলেন।

নিজ দেয়ালে বা কখনো কখনো গ্রূপের দেয়ালে লিখে দিলেন…………..

”আজকাল কিছু কিছু মানুষ আছে…………….. অথবা, ……………….. “সেদিন এক ভদ্রলোককে দেখলাম…………….”আমাদের ভিতরে অনেককেই দেখি………..” অথবা “মনু, কী করতাছ সবই দেখতাছি কিন্তু, ……………ভাল অয়া যাও” ইত্যাদি ইত্যাদি।

ব্যাস, এরপর……………..

বেটা দেখবে, পড়বে, বুঝবে যে তাকে বলা হচ্ছে-অথচ জ্বলে পুড়ে খাক হয়ে গেলেও কিছু বলতে পারবে না। আবার জিনিসটা মানহানী বা ডিজিটাল মামলা খাবারও ঝুঁকি তৈরী করবে না। ভূতকে গাইলালে কে মামলা করবে? ওই অনেকটা উগান্ডাকে গাইলানোর মতো।

হ্যা, এই কাজ আমিও করি। এটা অনেকটা ঝিঁ কে মেরে বউকে বোঝানোর মতোই। সরাসরি কিছু বলতে চাইলেও নানা বাস্তবতায়, বাধ্যবাধকতায় বলা যায় না, অথচ বলাও জরুরী। না বলতে পারলে পেট ফুলে উঠবে।

কী আর করা, দাও ফেসবুকে ফরমাইয়া।

আমি নিজেও যে মাঝেসাঝে এই কাজ করি না, তা না। অসঙ্গতি বা ব্যক্তিগত গ্রীভ্যান্স যখন মুখ ফুটে সরাসরি বলবার উপায় থাকে না, তখন আর উপায় কী? তবে, এখনো, বাসার বউকে লক্ষ্য করে স্টাটাস দেয়া হয় নাই। ওইটা ট্রাই করতে হবে। হ্যা, একেবারেই একক ব্যক্তি বা গোষ্ঠী বা প্রতিষ্ঠানের কোনো বিশেষ একটি ইস্যুকে টারগেট করে লিখেছি খুব খুব খুব কম। যদিও, লেখা দেখে মনে হতে পারে, “এই যে, এইডা আমারে নিয়াই লেহা”, তবে তা আদতে সত্যি না। ব্যক্তির বা এককের কাজ ও কাম নিয়ে আমি এত বেশি ভাবিত হই না, হলেও সেটাতে এত প্রকাশ্যে রিএ্যাক্ট করি না। অন্তত চেষ্টা করি।

হ্যা, এই ভায়া মিডিয়া তোপ দাগাতেও যে সমস্যা হয় না তা না। হয়। যেমন ধরুন, ভুল বুঝে, ভুল জেনে, জাজমেন্টাল হয়ে দিলাম এক প্রাণঘাতি পোস্ট। টারগেট একদম আয়রন ডোমের নিখূঁত ইফিশিয়েন্সীতে আঘাত করল। টারগেট জ্বলে পুড়ে গেল। কিন্তু, হয়তো বেচারা এর যোগ্য ছিল না। অথবা, মিসফায়ার হল।

তবে, হ্যা, তবে, এই ভায়া মিডিয়াম চোর পুলিশ খেলায়ও একটু বুদ্ধি ধরতে হয়। সেই ৯০ দশকের মতো চিঠি চালাচালির ভুলের মতো, ভুল আকাশে ঘুড়ি ওড়ালে মুশকীল।

মজার বিষয় হল, একদম, পিওরলি আমাকে নিয়ে বা আমাকে টারগেট করে জ্বালাময়ী ফেসবুক পোস্ট দেয়া হয়েছে আর সেটা নিখূঁতভাবে আমার বুকে শেল বিঁধিয়েছে-এমন ঘটনা বেশ কয়েকটা হয়েছে। আমি বুঝেছি। রিএ্যাক্ট করিনি। হ্যা, এমন ঘটনার পরে কখনো কখনো পোস্টারবয়, মানে পোস্টদাতার সাথে ওই নিয়ে বা অন্য কিছু নিয়ে দিব্যি কথা বলেছি, সম্পর্ক চালিয়ে গেছি। তাকে বুঝতেও দিইনি। দরকারও হয়নি। ফেসবুকে রাজা উজির মারা নিয়ে এত সিরিয়াস হলে কী করে চলবে বস।

আবার, এমনও হয়েছে, ওরকম মিসাইল হামলা আমার জন্য পজিটিভ হয়েছে। ওই বিষয় নিয়ে দীর্ঘ দশপাতা লেখা পয়দা করেছি এমনও হয়েছে। খারাপ কী? তাতিয়ে দেয়ায় যদি আমার নতুন একটা লেখা পয়দা করতে পারি, তবে তাতানো ভাল।

তবে তাতারবৃন্দ,

মনে হরিয়েন নো, য্যান, আঁই ন বুঁজি।

আঁই ওয়ার হগলটিই বুঝিযেন।

খালি নঁ মাতি।

ফেসবুক ফ্রেন্ডশীপ আর ফেসবুক শত্রূতা-”ক্ষণিকের ভাল লাগা ফুল।”

(মজা অনেক হল। সারকথা বলি, যে কাউকে নিয়ে, যে কোনো কিছুকে নিয়ে পারসেপশন বানাতে, নিজের চিন্তা দাড়া করিয়ে ফেলতে, বিচার করে ফেলতে, ফেসবুকে ফরমাইয়া ফেলবার আগে, আরেকবার, আরেকবার, আরেকটুবার ভেবে নিন, চিন্তিয়ে নিন।)

#socialmediadomination #socialmediamanipulation #socialmediadestruction #socialmediahype #socialmediaaholic #socialmediatrial #moralpolicing #VoiceRaise #teachingalesson #digitalrevenge

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *