Skip to content

কয়েক গুচ্ছ কবিতা

#বৃষ্টি তোমায় মেঘলা দিনে,

দেখতে বড় ইচ্ছে হয়।

বৃষ্টি ফোটা ছোঁয়া বারণ,

ইচ্ছেগুলো মোটেই নয়।

বারান্দাতে ফোঁটায় ফোঁটায়,

বর্ষা বারি ঝরেই যায়।

চোখের কোণের দু’ফোঁটা জল,

কপোল তারে শুকিয়ে নেয়।


# আমি পূর্ব বা পশ্চিমের কেউ নই।

আমি এদেশ বা ওদেশের নই।

আমি তোমার বা তোমাদের নই।

আমি একান্তই আমার নিজস্ব জগতের একাকী অধীশ্বর।

আমি সাদা নই,

আমি কালো নই,

আমি এই গোত্রের, ওই দলের, সেই বিশ্বাসের নই।

আমি আরব কিংবা আফ্রিকী কোনোকিছুই নই,

আমি কেবলই একজন রক্তমাংসের মানুষ।


#স্বপ্নগুলো আদৌ তোমার স্বপ্ন নয়।

স্বপ্নঘোরের জগতটাকে,

আপন করে নিতে অনেক কষ্ট হয়।

দৃশ্যপটে তোমার ছবি, স্পষ্ট হয়।

আজও তবু স্বপ্ন দেখে,

শুধু শুধুই সময় আমার নষ্ট হয়।

কষ্ট হয়।


#আজও কি তুই শেষ বিকেলে,

বারান্দাতে দাড়িয়ে রোস?

আজও কি তুই দেখতে আমায়,

একটু হলেও আকূল হোস?


#মেঘের আড়াল সঙ্গী করে,

চাঁদটা ঢাকে দুখ।

হারিয়ে যদি ফেলো আমায়,

পাবে কি খুব সুখ?

সময়গুলো স্মৃতি হবে,

ধূসর আমার মুখ।

বুকের মাঝে বাঁধবে জমাট,

বিরহের অসুখ।


#মৃত নগরের আস্তাকুড়ে,

মিথ্যে সুখের নিবিড় চাষ।

মরিচিকার চোরা গাঙে,

দিবানিশি তোমার বাস।


#আকাশের মন খারাপের দিনে,

কে শোনায় কান্না ভেজা মন খারাপের গান?

নাগরিক সুখ অসুখের নিত্য আবাহনে,

বুকেতে জমাটবাঁধা রুদ্র অভিমান।


#হারকিউলিসও কখনো কখনো ক্লান্তিতে যায় ডুবে,

ফিনিক্সের বুকের আগুনও যায় নিভে।

আইকারুসের প্রাচীন ডানায় বিষাদ করে ভর,

কালো ডানা চিলেরাও তখন সমতলে বাঁধে ঘর।


#দারিদ্র্য, তুমি মোর আজন্ম এক পাপ,

দারিদ্রের ললাট লিখন, জন্ম অভিশাপ।

অদৃষ্টরে সঙ্গী করে, নিত্য বসবাস,

দরিদ্রের দিনলিপি, কুচ্ছিৎ হতশ্বাস। 


#আনুষ্ঠানিকতার অপেক্ষায়,

ঝুলে থাকে একটি সম্পর্ক,

অথবা সম্পর্কের ইতি।

আনুষ্ঠানিকতার আগে,

অপেক্ষার হ্যাঙারে ঝোলে নিয়তি।


#এসো তবে, আজ আমরা দখিনা মলয় নিয়ে মাতি।

মৃত্যুর আলাপন যদি ঘ্যানঘেনে ক্লিশ হয় অতি।

এসো না হয় একটি পরাবাস্তব স্বপ্নের চরিত্র বিশ্লেষন করি।

এসো, তুমি আমি, আজ সেই কল্পিত নিপবনে জোৎস্না উৎসব করি।


#গিয়েছি ভুলে পুরোনো ‘অতীত, সুখস্মৃতি সব।

মনে পড়ে, এক দিন, ছিল প্রাণের উৎসব।

মনে কি পড়ে আজও, কিংবা পড়ত মনে?

ফিরে কি আসে কভূ, নিরব সঙ্গোপনে?


#কিছু ভুল ভাঙতে নেই।

কিছু ভুল জানতে নেই।

থাকনা কিছু ভুল ভুল হয়েই।

কিছু ভুল বোঝাবুঝি যাক না রয়েই।


# যখন তুমি বলো আমায়, ”ভালোবাসার তৃষ্ণা বুকে শ্রাবন জলের চাতক হয়ে রই।”

আমার ভিষন ইচ্ছে করে, বলতে তখন,

”তুমি তোমায় বাসতে ভালো, দিলে আমায় কই?”


#শিকার:
কামোন্মত্ত কামুক কাপুরুষ পুরুষ,
ক্লীব জড়তার মাঝেও খোঁজে লাস্যতার জৌঁলুস।
পরিধেয় সংক্ষেপিত নাকি আজানুলম্বিত,
সাদা নাকি কালো, আঁধার স্তম্ভিত,
শ্লীল কি অশ্লীল, তরুণী কি বিধ্বা,
বক্র কটাক্ষে ক্লীবতর কে বা?
কামুক উন্মত্ত পৌরুষের, তাতে যায় আসে না কিছু।
ধর্ষকাম দৃষ্টিকোন, নেয় লালস্যের পিছু।


#”কয়েক দিস্তা অপ্রকাশিত কবিতার পান্ডূলিপি বিক্রী হবে।
বিকোবে চড়া দামে।”
মুহুর্তে ফুরোলো সঞ্চিত তুলট কাগজ।
”কয়েক পেয়ালা পাগলাটে নেশা বিক্রী হবে।
উপভোগ করা যাবে তাড়িয়ে তাড়িয়ে।”
কে কোথা থেকে কেড়ে নিল সবটুকু।
কয়েক গুচ্ছ দুঃখ বিক্রী করতে চেয়েছিলাম।
একদম সস্তায়, জলের দরে বলা চলে।
আজও বসে আছি সওদা সাজিয়ে।
খদ্দের মেলেনি বহু আয়াসে।


#কিশোরীর নিষ্পাপ হাসিতে স্বাধীনতা দেখেছি,
গায়ে মেখেছি মুক্তির সুবাতাস।
স্বাধীনতা,
তাকে বাঁধা যায়না কোনো ফ্রেমে,
অনশন তান্ডবে। অবেলায়, গ্রহনের কালে।
অকরুণ নির্দয়তা কিংবা অব্যাখ্যাত আবেগে।
স্বাধীনতা দেখেছি, ভোরের নতুন সূর্যে।
হাতছানি তার অমানিশার অবসানে।
স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছি বায়ান্নয়, একাত্তরের উত্তাল দিনে,
পেয়েছি নতুন ভোরের রাজসিক গাত্রোত্থানে।


#তবু সেই পাথর সময়ে
আবার মিলব বিকেল রোদে।
সাদাটে নীল মেঘ আবছা রঙে আকাশ রঙা ক্যানভাসে
আনাড়ি হাতের একটানে
ঝাপসা অবয়বে প্রান ফোটাবে।
আমার অস্তিত্বে।


#পথের ছেলে রাত বিরাতে পথে পথে ঘুরি।
পথের মাঝে হঠাৎ একা
হাতটা তোমার ধরি।
আহ! একলা একা মেঘ দুপুরে
একাই উড়াই ঘুড়ি।
তুমি তখন বারান্দাতে
অবাক চাঁদের বুড়ি।


#লাল নীল কত স্বপ্নে বিভোর, তোমার আমার,

সাদা কালোর সংসার,

সুতোয় বাঁধা জীবন ছেড়ে, উড়াল দেব

বাঁধবে কীসে আর?

হাত বাড়ালে আর কি পাবে? থাকবে পড়ে,

একলা স্মৃতি তার।


#পিঞ্জিরাতে বাঁইন্ধা রাখুম, বন্ধু তোরে,

যাইবি কোথায় বল?

বুকের পাজর কইরা রাখুম, বন্ধ গরাদ,

করিস না তুই ছল।


#আঁধার রাতে এক পশলা, অবাক আলো,

দেখিস যদি হঠাৎ করে তুই,

জানলা খুলে, একলা একা।

তারার সাথে বলিস কথা সই।


#আলো হয়ে নাইবা এলাম,

আঁধার হয়েই রই,

জনম ভরা কালো যাহার,

জোৎস্না দেখার চক্ষু তাহার কই?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *