এইচ আর নিয়ে একটি গল্প। একটি আধুনিক এইচ আর থাকা না থাকার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব নিয়ে লেখা।
এক গ্রামে এক লজিং মাস্টার থাকত যার বেতন খানাপিনা গ্রামবাসী চাঁদা তুলে দিত। একবার নতুন চেয়ারম্যান হলেন একজন। তিনি ভাবলেন, ব্যাটা সামান্য যায়গীর মাস্টারকে এত সুবিধা দেবার দরকার কী? তিনি মাস্টারের ফ্রি খানা বন্ধ করে দিলেন। মাস্টার তবু গ্রামের স্কুলে পড়ানো বন্ধ করলেন না।
চেয়ারম্যান ভাবল, খানা বন্ধ করেও ব্যাটা যায়নি তাহলে বেতনও বন্ধ করা যাক। তো তাই করা হলেও মাস্টার তবু চাকরী না ছেড়ে গ্রামে রয়ে গেল আর পড়ানো চালু রাখল। মাতবর ভাবে ভালইতো, বিনা পয়সায় বেশ খাটিয়ে নেয়া যাচ্ছে। ব্যাটার নিশ্চই ঠ্যাকা আছে। নাহলে এভাবে কেউ খাটে এত অপমান করার পরেও। এভাবে এক বছর গেল।
হঠাৎ একদিন দেখা গেল মাস্টার লাপাত্তা।সারাগ্রাম খুঁজেও তাকে পাওয়া গেল না। মাতবর সাহেব গ্রামবাসীকে কথা দিলেন অতিসত্বর নতুন মাস্টার নিয়োগে দেবেন। এমন মাস্টার পয়সা দিলে কত মিলবে। তিনি পরদিন দলবল নিয়ে স্কুল গেলেন বাচ্চারা কেমন পড়াশোনা করে তা দেখতে।
বাচ্চাদের তিনি কিছু একটা লিখতে দেয়ার পর সবাই দেখল সবগুলো বাচ্চা সব অক্ষর লিখছে উল্টোভাবে আর ডানদিক হতে। গ্রামবাসী বুঝল মাস্টার মশাই গোস্যা করে দীর্ঘমেয়াদে তাদের কি সর্বনাশ করে দিয়ে গেছে।
একটি প্রতিষ্ঠান/কোম্পানী/সংগঠনের জন্য ভাল ও খারাপ এইচআরের প্রভাব এরকম দীর্ঘমেয়াদী। চট করে বোঝা যায়না। দীর্ঘমেয়াদে সুফল বা কুফল বোঝা যায়। দারুন একটি আধুনিক এইচআর প্রতিষ্ঠা করুন। তারপর নাকে তেল দিয়ে ঘুমান কিংবা দুবাই সিঙ্গাপুর ঘুরে বেড়ান। যা করার ওই এইচআরই করে দেবে, আপনার কোম্পানীর জন্য জুতো সেলাই হতে চন্ডিপাঠ-সবকিছুর জন্য উপযুক্ত কর্মীবাহিনী সাজিয়ে দিয়ে।
আপনার বিজনেসের যত ধরনের ভাইটাল বিভাগ, অপারেশন আছে সেগুলোতে ম্যানপাওয়ার দেয়া থেকে শুরু করে সেইসব সুপারম্যানদের সেরাটুকু আদায় করে নেবার যত কায়দা-কানুন প্রতিষ্ঠানকে রাখতে হয় তার প্রত্যেকটির সূচনা করে এইচআর।
আর তাই এইচআরকে নিয়ে কাজ করতে হবে সবার আগে। তাই এইচআরকে প্রায়োরিটি লেভেলের ওয়ানে রাখতে হয়। বলা হয়, যে কোনো প্রতিষ্ঠানে এইচআর হল মাথা আর ফাইন্যান্স হল ব্যাকবোন। অবশ্য যারা ভাবেন, প্রোডাকশন চালু থাকলেই হবে, তাদের কথা ভিন্ন।